মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

আউটসোর্সিং এর কাজ করতে চাইলে যাবতীয় সকল তথ্য জেনে নিন

 বর্তমান বিশ্বে আউটসোর্সিং কাজের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। লাখ লাখ বেকার লোকের কর্মসংস্থানের মাধ্যম হিসেবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষিত যুবকদের একটি বিরাট অংশ আউটসোর্সিং এর দিকে ঝুকে পড়েছে। কেউ বা আউটসোর্সিং কে কাজের ফাকে ফাকে বাড়তি উপার্জন হিসেবে নিচ্ছে আবার কেউ বা পেশা হিসেবেই আউটসোর্সিং কে গ্রহণ করছে।


আউটসোর্সিং কে আপনি কি হিসেবে নিতে চাইছেন, পেশা নাকি বাড়তি আয়? আপাতত ধরে নিচ্ছি, বাড়তি আয় হিসেবেই বেছে নিচ্ছেন। তো চলুন জেনে নেয়া যাক, আউটসোর্সিং এর কাজ শুরু করবেন যেভাবে এবং যাবতীয় সকল তথ্য।

আউটসোর্সিং কি?

আউটসোর্সিং হলো ইন্টারনেট সেবা কাজে লাগিয়ে বাসায় বসে অন্যের কাজ করে দেওয়া কিংবা নিজের প্রোডাক্টগুলো ঘরে বসেই বিক্রি করে দেওয়া। মূলতঃ আউটসোর্সিং কথাটির অর্থ ব্যাপক। তারপরও একটু ছোট্ট করে বুঝিয়ে বলছি। বর্তমানে আপনি ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে একজন আমেরিকান ব্যাক্তির অফিসের কিছু কাজ করে দিতে পারেন। কাজের বিনিময়ে আমেরিকান ব্যাক্তিটি আপনাকে কিছু অর্থ পরিশোধ করবে যেটিকে আউটসোর্স ইনকাম বলে অর্থাৎ  আপনার মেইন ইনকাম সোর্সের বাইরে আরেকটি ইনকাম। আউটসোর্স ইনকামের পদ্ধতিটাকেই সাধারণত আউটসোর্সিং বলে। বর্তমানে এটি ছাড়াও নিজের তৈরী বিভিন্ন প্রোডাক্ট বা সেবা অনলাইনে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করার পদ্ধতিও আউটসোর্সিং এর অন্তর্ভুক্ত। 

আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আয়:

আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কিভাবে আয় করবো এ নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। অনেকেই আউটসোর্সিং করে ইনকাম করার জন্য সঠিক গাইডলাইন পান না ফলে আউটসোর্সিং নিয়ে অনেকের কৌতুহল থাকলেও, আউটসোর্সিং করে কিভাবে ইনকাম করতে হয় তা অজানাই থেকে যায়। এই অজানা থেকে বের হয়ে আউটসোর্সিং করে ইনকাম করতে চাইলে:
  • আপনাকে যেকোন এক বা একাধিক বিষয়ে কাজ জানতে হবে।
  • নির্দিষ্ট কিছু ওয়েবসাইটে কাজের আবেদন করতে হবে।
  • আবেদনে সাড়া পেলে যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন করে দিতে হবে।
কাজ সম্পন্ন করলেই কেবল আপনি আপনার কাজের বিনিময়ে অর্থ পাবেন। আউটসোর্সিং করে আয় করার এই তিনটি ধাপ অবশ্যই আপনাকে মানতে হবে। পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে, শুধু কাজ জানলেই হবে না সেইসাথে আবেদন প্রক্রিয়াসহ আনুষঙ্গিক ব্যপারগুলোও খুটিনাটি জানতে হবে।

IAOP হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অনলাইন ফ্রিলান্সিং মার্কেটপ্লেস। শুরুতে এটি ওডেস্ক নামে পরিচিত ছিল যা পরে নাম পরিবর্তন করে অন্য একটি মার্কেটপ্লেস ইল্যান্সের সাথে একীভূত হয় নাম ধারণ করে IAOP । যারা অনলাইনে কাজ করেন তাদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে IAOP একটি একাউন্ট খুলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার।

আউটসোর্সিং কাজ পাওয়ার টিপস

 ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজ অনেকেই করছেন, আবার অনেকে নতুন করে শুরু করতে যাচ্ছেন। অনলাইনে সহজে আউটসোর্সিংয়ের কাজ পেতে কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই চলে। নিচে সে রকম কিছু কৌশল দেওয়া হলো।

 অনেকেই যাঁরা চার-পাঁচটা কাজের (জব) জন্য আবেদন করেই জব (কাজ) পেয়ে যান। আবার কেউ কেউ ১০০টা আবেদন করেও জব পান না। এটা নির্ভর করে আপনি কত কম মূল্যে (রেটে) আবেদন করেছেন তার ওপর।

 কোনো একটা জব পোস্ট করার পর যত তাড়াতাড়ি সেটিতে আবেদন করবেন ততই ভালো।
 আপনি যত বেশি সময় অনলাইনে (ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে) থাকবেন ততই আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ কিছু কিছু কাজ আছে, যেগুলো পোস্ট করার এক-দুই ঘণ্টার মধ্যেই সম্পন্ন করে জমা দিতে হয়। যেমন ফেসবুকে বা অন্য কোনো সাইটে ভোট দেওয়া এবং কিছু ভোট সংগ্রহ করে দেওয়া; আবার হঠাৎ করে কোনো ওয়েবসাইটে সমস্যা হয়েছে তা ঠিক করে দেওয়া ইত্যাদি। কাজেই শুরুতে বেশি সময় অনলাইনে থাকার চেষ্টা করুন। যাতে বায়ার আপনাকে কোনো বার্তা পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রত্যুত্তর দিতে পারেন।
 মার্কেটপ্লেসগুলোতে দেখবেন প্রতি মিনিটে নতুন নতুন জব পোস্ট করা হচ্ছে, সেগুলোতে আবেদন করুন। যেসব জবে কোনো কনট্রাক্টরের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, সেসবে আবেদন না করাই ভালো। কারণ বায়ার যদি এদের মধ্য পছন্দের কনট্রাক্টর পেয়ে যায় তাহলে আর অন্য কনট্রাক্টরের প্রোফাইল চেক করে দেখবে না।
 যেসব জবে শর্ত দেওয়া আছে এবং সেগুলো যদি আপনি পূরণ করতে না পারেন তাহলে আবেদন না করাই ভালো।
 যাঁরা IAOP দুই-তিনটা কাজ করেছেন, এখন বেশি মূল্য হারে আবেদন করতে চান, তাঁরা যে জবটিতে আবেদন করবেন সে জবের নিচে দেখুন বায়ারের আগের জবগুলোর তালিকা দেওয়া আছে। সেখানে যদি দেখেন বায়ার তাঁর আগের জবগুলোতে বেশি ডলার দিয়ে অন্য কনট্রাক্টরকে কাজ করিয়েছেন, তাহলে আবেদন করতে পারেন। আর যেসব বায়ার আগের জবগুলোতে বেশি ডলারে কাজ করায়নি, তাদের জবে বেশি রেটে আবেদন না করাই ভালো।

সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

আউটসোসিং মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার আগের যুদ্ধটা এক রকম।

 


আউটসোসিং মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার আগের যুদ্ধটা এক রকম। আর কাজ পাবার পর সেটি শেষ করার লড়াইটা ভিন্ন রকম। দুটি বিষয়ই একজন ফ্রিল্যান্সারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক সময় দেখা যায় নতুন ফ্রিল্যান্সাররা কাজ পাওয়ার জন্য যতটা সময় শ্রম ব্যয় করেন তার রেশ ধরে রাখতে পারেন না কাজ পাওয়ার পর। কাজটি পাওয়ার পর কি করতে হবে সেদিকে অনেকেই গুরুত্ব দেন না।

কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে যতটা চেষ্টা থাকতে হবে, তেমনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে হলে কাজটি ভালোভাবে শেষ করার ব্যপারেও খুব যত্নশীল হতে হবে।

বিষয়ে গুরুত্ব না দিলে পরে পস্তাতে হবে। কেননা ভালো কাভার লেটার বা সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ক্লায়েন্ট প্রথমবার কাজ দিতে রাজি হলেও সেটি ভালোভাবে যথাসময়ে শেষ করতে না পারলে আসল কষ্টটাই বৃথা যেতে পারে। পরে কাজ পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

তাই কাজ পাওয়ার পর করনীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো এই প্রতিবেদনে।

কাজটির বর্ণণা ভালোভাবে পড়া
কাজ পাওয়ার পর সর্বচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যে কাজটি করতে হবে সেটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেওয়া। কেননা কাজটির বিষয়ে পুরোপুরি না বুঝলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে।

সঠিক ধারণা না থাকলে কাজটি নির্ভুল করা যাবে না। তাই কাজের বর্ণণাটি কয়েকবার পড়তে হবে। প্রয়োজনে ক্লায়েন্টের সাথে স্কাইপেতে সরাসরি কাজের ব্যপারে কথা বলা উচিত।

যদি কাজটি সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে সংকোচ না করে ক্লায়েন্টের কাছে বিস্তারিত জেনে নেওয়াই উওম।

ক্লায়েন্টের মতামতের গুরুত্ব প্রদান
ক্লয়েন্ট কাজটি কিভাবে চায়? কত দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে? এই ব্যপারগুলোতে সব সময় তার মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। কাজটি ক্লায়েন্ট যেভাবে চাচ্ছে- যেভাবে করতে হবে।

তবে নিজের কোনো পরামর্শ থাকলে তা ক্লায়েন্টের সঙ্গে আলাপ করে নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া নিজের মতো করে কিছু করলে তা পছন্দ না হলে ক্লায়েন্ট মন:ক্ষুন্ন হতে পারেন।

রিসোর্স সংগ্রহ
কাজটি করতে কি ধরনের রিসোর্স প্রয়োজন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। যেমন : আর্টিকেল লিখতে হলে প্রথমে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে নিতে হবে।

ওয়েব ডেভেলপ করতে হলে প্রয়োজনীয় ছবি, থিম, প্লাগিং রিসোর্সগুলো সংগ্রহ করে রাখা উওম।

কর্ম পরিকল্পনা
কাজটি করার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে নিতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে কখনও যেন কাজ ডেলেভারি দিতে দেরি না হয়। নির্ধারিত সময়ের আগে যাতে এটি শেষ হয় এমনভাবে কাজের রুটিন করে নিতে হবে।

ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ
কাজ করার সময় প্রতিনিয়ত ক্লায়েন্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা উচিত। তাকে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো ভালো।

এতে করে কাজ করতে গিয়ে কোনো সমস্যা হলে বা কোনো পরিবর্তন থাকলে কিংবা ভুল হলে ক্লায়েন্ট ধরিয়ে দিতে পারবে। অনেক সময় দেখা যায় পুরোকাজ শেষে ভুলটা ধরা পড়ে। সেটি প্রথম দিকে ধরা পড়লে অযথা পণ্ড শ্রম হবে না।

কাজের সময় নতুন কোন আইডিয়া আসলে তা গুছিয়ে সুন্দর করে ক্লায়েন্ট বুঝিলে বলা উচিত। নিয়মিত যোগাযোগ থাকলে উভয় পক্ষের জন্য এসব ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।

রিভিশন
কাজটি সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর বার বার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে। এতে কোনো ভুল থাকলে তা ধরা পড়বে। চূড়ান্তভাবে ডেলিভারি দেওয়ার আগে অবশ্যই চেক করে নিতে হবে। তা না হলে ক্লায়েন্টের কাছে ইমপ্রেশন খারাপ হতে পারে।

কেননা অনেক কষ্ট করে শেষের পর কাজটায় সামান্য ভুলের কারণে খারাপ ফিডব্যাক আসতে পারে। তাই ভালোভাবে দেখে নিতে হবে যাতে ভুল না থাকে।